চোখ ওঠা ভাইরাস জনিত রোগ। চোখ যখন প্রচন্ড পরিমাণে লাল হয়। চোখ দিয়ে অঝোর ঝরঝর করে পানি পড়ে তখন প্রাথমিক লক্ষণ বোঝা যাবে। শরীরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এলার্জি আছে এমন ব্যাক্তি চোখ ওঠার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ঋতুর পরিবর্তন ঘটলে বাতাসে আদ্রতা বাড়ে এই সময়টি চোখ ওঠার রোগ বেশি দেখা দেয়। চোখ ওঠা ছোট বড় কমবেশি সবারই হয়। ড্রপের মাধ্যমে চোখ সকল ভাইরাস শেষ হয়। চোখ ওঠা প্রাথমিক চিকিৎসার সম্পর্কে অনেকেই অবগত। এই চিকিৎসা সঠিক নিয়ম জানলে ঘরে বসে চোখ রোগের চিকিৎসা নিজেই নিতে পারবেন।
চোখ ওঠা
চোখের মধ্যে খসখসে ভাব বেশি হলে নিকটস্থ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন চোখের ডাক্তারের পরামর্শ নিন। অনেক সময় চোখ বেশি চুলকানোর ফলে চোখ দিয়ে পানি ঝরে, কেতুর জমে ও চোখ ঝাপসা দেখে। এই সময় দেরি না করে চিকিৎসা গ্রহণ করা উত্তম হবে। কখনোই রোগাক্রান্ত ব্যক্তি গামছা, রুমাল ও তাওয়ালে ব্যবহার করা যাবে না। এগুলোর মধ্যে একজন থেকে আরেকজনের রোগ ছড়াবে। রুগীকে অবশ্যই হাত পরিষ্কার করে চোখ ছোঁয়াবে। আক্রান্ত ব্যক্তির চোখে চিকিৎসক ব্যতীত কেউ স্পর্শ না করাই ভালো। চোখ ওঠা প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখা উচিত: আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এড়িয়ে চলুন।আক্রান্ত ব্যক্তির চশমা, তোয়ালে, রুমাল ইত্যাদি ব্যবহার করবেন না।আপনার চোখ নিয়মিত ধুয়ে নিন। আপনার হাত নিয়মিত ধুয়ে নিন।চোখ ওঠার প্রাথমিক চিকিৎসা হলো : আপনার চোখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।আপনার চোখের উপর ঠান্ডা সেঁক দিন।আপনার চোখে চোখের ড্রপ ব্যবহার করুন।
চোখ ওঠার ড্রপ
চোখ ওঠা জটিল কোন রোগ নয়। চোখে বেশি পড়লে সমস্যা দেখা দিলে। কেবলমাত্র তখনই অভিজ্ঞ চোখ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া যায়। প্রাথমিক অবস্থায় কিছু ড্রপ ব্যবহার করলে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হওয়া যায়। তবে সে ক্ষেত্রে দুই থেকে চারদিনের মধ্যে চোখে অসহ্য জ্বালাপোড়া ও খসখসে অনুভব করা যায়। এই সময় চোখ চোখে হাত দেওয়া ও চোখ চুলকানো থাকে বিরত থাকলে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে বেশি সময় লাগে না। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে আমরা কয়েকটি ড্রপের নাম বলব।
- প্যারাফিন অয়েল: এই তেল চোখের পৃষ্ঠে একটি পাতলা স্তর গঠন করে যা পানি বা বাতাসের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
- গ্লিসারিন: এই তরল চিনি চোখের পৃষ্ঠকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে।
- হেক্সামিথাইলিন বিসুলফাইট: এই যৌগটি চোখের পৃষ্ঠের উপর একটি পাতলা প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে।
এই ড্রপ গুলো ব্যবহার করলে কোন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না। বাসায় বসে চোখের রোগের সমস্যা সমাধান করা যাবে। চোখ মানুষের অমূল্য সম্পদ তাই সেনসিটিভ ভাবে চোখের চিকিৎসা ড্রপের মাধ্যমে নিবেন। গ্রামের মানুষ ভুলবশত অনেক গাছের পাতার রস দিয়ে চোখের অবস্থা খুবই খারাপ করে। এই সকল ভ্রান্ত থেকে বেরিয়ে আসবেন। সম্পূর্ণভাবে চোখের ড্রপের উপর নির্ভর করুন। দ্রুত চোখের সমস্যার সমাধান পেয়ে ড্রপ ব্যবহার করুন। চোখে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমনের ফলে ভাইরাসে পরিণত হয় পরে চোখটা শুরু করে। এই সময় আমাদের দেওয়া ড্রপ তিন থেকে চারবার ব্যবহার করলে চোখে কোন প্রকার সমস্যা থাকবে না। তাই ভয় ভীতি না হয়ে চোখ ওঠার রোগ সম্পর্কে জেনে নিন।
চোখ ওঠার রোগ ঘরোয়া চিকিৎসা
গ্রীষ্ম মৌসুম শেষ হলে চোখ ওঠার শুরু করে। এই মৌসুম মানুষের দুশ্চিন্তার ভাবনা শেষ নেই। এই রোগকে মানুষ মৌসুমী হাওয়া সাথে তুলনা করে। তবে বিজ্ঞানী ভাষায় চোখের কোনায় গ্রন্থিতে তেল জমে থাকলে অঞ্জলি অথবা চোখে ওঠে। সঠিক মত চিকিৎসা না হলে সারা জীবনের জন্য অন্ধ হতে হবে। সচেতন লোক হিসেবে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা নিবেন। বাড়িতে তাওয়ার ওপর শুকনো পরিষ্কার কাপড় নিয়ে উষ্ণ তাপ দিয়ে নিন। সেই কাপড়টি চোখের আশেপাশে দিনে কয়েকবার করে দিলে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া চিরদিনের জন্য শেষ হয়ে যাবে। ৬ থেকে ৭ দিন ব্যবহার করলে অটোমেটিক রোগ প্রতিরোধ করা যাবে।
চোখের ব্যাকটেরিয়া সরাতে বাজারে ক্যাস্টর অয়েল পাওয়া যায়। চোখে হালকা তাপ দিয়ে ক্যাস্টর অয়েল চোখের আশেপাশে দিলে চোখের ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন। পেয়ারার পাতা যেকোনো ধরনের জীবাণু ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা আছে। পেয়ারার পাতা শুকনো তাওয়াতে গরম করে নরম কাপড় দিয়ে চোখের উপরে রাখলে অনেক আরাম পাওয়া যাবে। অঞ্জলি বা চোখ ওঠার জন্য এই এই প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে খুব উপকার পাওয়া যাবে।
Read more about: naz-tricks.in
চোখ ওঠার রোগে দোয়া
কুরআনে সকল রোগের ঔষধের সমাধান নিহিত। চোখ উঠলে হুজুর বা মাওলানা কাছে দোয়া করে নিলে রোগ থেকে খুব কম সময়ে মুক্তি পাওয়া যায়। আমরা নিজেকে মুসলিম হিসেবে দাবি করি কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই দোয়া হাদিস সম্পর্কে জানি না। তাই আমরা আজকে আপনাদের জন্য চোখ ওঠার দোয়া নিচে প্রদান করব। এই দোয়া পড়ে চোখে ফুঁ দিলে আল্লাহর কুদরতিতে চোখ ওঠা রোগ সমাধান দিবে। মানবদেহের প্রতিটি অঙ্গের মধ্যে চোখ একটি জরুরী ও কার্যকর। চোখের বিভিন্ন ধরনের ব্যথার রোগ আক্রান্ত হতে পারে। চোখে কোন প্রকার ব্যথা অনুভব হলে সাথে সাথে সুরা কফ ২২ নং আয়াত পড়ে ফেলুন। দেখবেন চোখের ব্যথা কমে গেছে।
চোখ ওঠার রোগে দোয়াটি পড়তে পারেন:
اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبِ الْبَاسَ اشْفِهِ وَأَنْتَ الشَّافِي لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا
উচ্চারণ:“আল্লাহুম্মা রব্বান্নাসি আজহিবিল বাসা, ইশফিহি ওয়া আন্তাশ শাফি, লা শিফায়া ইল্লা শিফায়ুক, শিফায়ান লা ইয়ুগাদিরু সাকামা।”
অর্থ:“হে মানুষের রব! তুমি কষ্ট দূর করো। তাকে সুস্থ করো। তুমিই একমাত্র সুস্থকারী। তোমার সুস্থতা ছাড়া আর কোনো সুস্থতা নেই। এমন সুস্থতা দাও যা কোনো রোগকে অবশিষ্ট রাখে না।”
এছাড়াও, নিম্নলিখিত দোয়াটিও পড়তে পারেন:
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
উচ্চারণ:“আউজুবিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাক।”
অর্থ:“আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাক্যের সাহায্যে সৃষ্টির সকল অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই।”