মায়ের পেটে সন্তান কিভাবে থাকে

মায়ের পেটে সন্তান কিভাবে কত দিন থাকে

যখন কোনও মহিলা গর্ভবতী হন, তখন শিশুটি তার জরায়ুতে বৃদ্ধি পায়। জরায়ু হল পেলভিসের মধ্যে অবস্থিত একটি পেশীবহুল অঙ্গ। এটি গর্ভাবস্থায় শিশুর জন্য একটি নিরাপদ এবং পুষ্টিকর পরিবেশ প্রদান করে। গর্ভধারণের প্রথম ত্রৈমাসিকে, ভ্রূণ (যা এখনও জন্মগ্রহণ করেনি এমন শিশুকে বলা হয়) দ্রুত বৃদ্ধি এবং বিকাশ ঘটায়। মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড, হৃদয় এবং অন্যান্য অঙ্গগুলি গঠিত হয়। বাহু, পা এবং আঙ্গুল এবং পায়ের আঙ্গুলও বিকাশ করতে শুরু করে।

দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে, ভ্রূণ বৃদ্ধি এবং বিকাশ অব্যাহত রাখে। চুল এবং নখ বাড়তে শুরু করে এবং ভ্রূণটি নড়াচড়া করতে শুরু করে। মা এই নড়াচড়াটিকে “কিকিং” বা “ফ্লাটারিং” হিসাবে বর্ণনা করতে পারেন। তৃতীয় ত্রৈমাসিকে, ভ্রূণ জন্মের জন্য প্রস্তুত হতে শুরু করে। এটি ওজন বাড়ায় এবং তার ফুসফুস পরিপক্ক হয়। ভ্রূণটিও মাথার নিচে ঘুরতে শুরু করে, যা জন্মের অবস্থান।

Image of গর্ভবতী জরায়ু

গর্ভাবস্থায় পূর্ণ মেয়াদ 40 সপ্তাহ। এই সময়ে, ভ্রূণ জন্মের জন্য প্রস্তুত। জরায়ুর পেশীগুলি সংকুচিত হতে শুরু করে, যা প্রসবের কারণ হয়। প্রসবের সময়, মা ভ্রূণটিকে তার যোনি দিয়ে জন্ম দেয়।জন্মের পরে, শিশু বাইরের বিশ্বের সাথে মানিয়ে নিতে শুরু করে। এটি নিজেরাই শ্বাস নিতে এবং খেতে শেখে। শিশুটি বৃদ্ধি এবং বিকাশও অব্যাহত রাখে এবং শেষ পর্যন্ত একজন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠে।

ছেলে সন্তান কত মাসে হয়

ছেলে সন্তান কত মাসে হয়, এই প্রশ্নের সরাসরি কোন উত্তর নেই। কারণ গর্ভধারণের পর থেকে সন্তান জন্মের সময় ৯ মাস বা ৪০ সপ্তাহ সময় লাগে, এবং ছেলে বা মেয়ে সন্তান হওয়ার ব্যাপারটি নির্ভর করে শুক্রাণুর Y ক্রোমোজোমের উপর।

যদি শুক্রাণুর X ক্রোমোজোম ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয়, তাহলে মেয়ে সন্তান জন্মে। আর Y ক্রোমোজোম মিলিত হলে ছেলে সন্তান জন্মে।তবে, মনে রাখতে হবে এই লক্ষণগুলো কেবল ধারণা করার জন্য। ছেলে বা মেয়ে সন্তান হওয়ার ব্যাপারটি নির্ভর করে সম্পূর্ণভাবে জৈবিক প্রক্রিয়ার উপর।

আধুনিক বিজ্ঞানের সাহায্যে আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে গর্ভের সন্তান ছেলে নাকি মেয়ে, তা জানা সম্ভব। সাধারণত গর্ভধারণের ২০-২২ সপ্তাহ পর থেকে আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে সঠিকভাবে ছেলে বা মেয়ে সন্তান হওয়ার ব্যাপারটি বলা যায়।

মেয়েদের বাচ্চা হয় কোন জায়গা দিয়ে

মেয়েদের বাচ্চা হয় যোনিপথ দিয়ে। গর্ভাবস্থার সময়, শিশু জরায়ুতে বৃদ্ধি পায়। প্রসবের সময়, জরায়ু সংকুচিত হতে থাকে এবং শিশুকে যোনিপথের দিকে ধাক্কা দেয়। যোনিপথ প্রসারিত হয় এবং শিশু বেরিয়ে আসে।কিছু ক্ষেত্রে, যদি যোনিপথে প্রসব সম্ভব না হয়, তাহলে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশুকে জরায়ু থেকে বের করা হয়। এই অপারেশনে, পেটে একটি ছোট কাটা দেওয়া হয় এবং শিশুকে বের করা হয়।

গর্ভবতী হওয়ার জন্য সহবাসের নিয়ম

 গর্ভধারণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হল ডিম্বস্ফোটনের সময়। নিয়মিত মাসিক চক্রের ক্ষেত্রে, ডিম্বস্ফোটন সাধারণত ঋতুচক্র শুরু হওয়ার ১৪ দিন আগে ঘটে। ডিম্বস্ফোটনের 2-3 দিন আগে এবং 1 দিন পর্যন্ত সহবাস করলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

 ডিম্বস্ফোটন ট্র্যাক করার বিভিন্ন উপায় আছে,আপনার মাসিক চক্রের দৈর্ঘ্য ট্র্যাক করে আপনি আনুমানিক ডিম্বস্ফোটনের সময় নির্ধারণ করতে পারেন।এই কিটগুলি প্রস্রাবে লুটেইনাইজিং হরমোনের (LH) মাত্রা পরিমাপ করে, যা ডিম্বস্ফোটনের 36-48 ঘন্টা আগে বৃদ্ধি পায়।ডিম্বস্ফোটনের সময়, শরীরের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পায়।

সহবাসের সময় কোন নির্দিষ্ট অবস্থান গর্ভধারণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে না। তবে, যোনিপথের মুখের কাছে বীর্যপাত হলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা বেশি। সপ্তাহে 2-3 বার সহবাস গর্ভধারণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। ডিম্বস্ফোটনের সময় প্রতিদিন সহবাস করলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

অন্যান্য টিপস:

  • সহবাসের আগে এবং পরে যোনিপথ পরিষ্কার রাখা।
  • সহবাসের আগে এবং পরে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা।
  • ধূমপান, মদ্যপান এবং অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ এড়িয়ে চলা।
  • সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা।

মনে রাখবেন:

  • সকলের গর্ভধারণের সম্ভাবনা একই রকম নয়।
  • কিছু দম্পতির গর্ভধারণ করতে অন্যদের তুলনায় বেশি সময় লাগতে পারে।
  • যদি আপনি 1 বছরের বেশি সময় ধরে গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন এবং সফল না হন, তাহলে একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *